এইচ এম কামরুজ্জামান সাকী।
দুনিয়ায় মানুষের আগমন ও অস্তিত্ব লাভ করার মূল মাধ্যম হলো পিতা – মাতা।
তাই দুনিয়াতে মানুষের প্রতি মানুষের যে দয়া রয়েছে, তার মধ্যে সবচেয়ে বড় দয়া বা অনুগ্রহ হলো সন্তানের প্রতি পিতা মাতার।
দুনিয়ার সব ভালোবাসার মধ্যে কোন না কোন, স্বার্থ বা উদ্দেশ্য জড়িত রয়েছে। কিন্তু পিতা – মাতা যে সন্তানকে ভালোবাসেন এর মধ্যে কোন স্বার্থ নেই।
এ কারণে আল্লাহ তায়ালা তার হকের পর পিতা মাতার হকের ঘোষণা দিয়েছেন।
পিতা মাতার অবাধ্য সন্তানের প্রতি লা’নত করেছেন। তার জন্য জান্নাত হারাম করে দিয়েছেন। আর দুনিয়াতে তার অপমান অপদস্ত অবধারিত করে দিয়েছেন।
পিতা মাতার প্রতি সদ্ব্যবহারের আদেশ করে আল্লাহ তায়ালা কোরআনে ইরশাদ করেন “তোমরা ইবাদত করো আল্লাহর,তার সাথে কোন কিছুকে শরীক করো না। আর সদ্ব্যবহার করো পিতা – মাতার সাথে,নিকট আত্নীয়ের সাথে, ইয়াতীম, মিসকিন, নিকট আত্নীয় প্রতিবেশি অনাত্মীয় প্রতিবেশি পাশ্ববর্তী সাথী, মুসাফির এবং তোমাদের মালিকানাভুক্ত দাস- দাসীর সাথে। নিশ্চয় আল্লাহ পছন্দ করেন না তাদেরকে যারা দাম্ভিক অহংকারী।
( সূরা নিসা আয়াত ৩৬)
আল্লাহ তায়ালা পিতা মাতার প্রতি আদব, সম্মান এবং তাদের সাথে সদ্ব্যবহার করাকে নিজের ইবাদতের সাথে একত্রিত করে ফরজ করেছেন। তিনি ইরশাদ করেছেন ” তোমাদের পালনকর্তা আদেশ করেছেন যে,তাঁকে ছাড়া অন্য কারো ইবাদত করো না।
এবং পিতা মাতার সাথে সদ্ব্যবহার করো।
তাদের মধ্যে কেউ অথবা উভয়ে যদি তোমার জীবদ্দশায় বার্ধক্যে উপনীত হয়। তবে তাদের উহ শব্দটিও বলো না।তাদেরকে ধমক দিয়ো না। তাদের সাথে শিষ্টাচারপূর্ণ কথা বলো। তাদের সামনে ভালোবাসার সাথে, নম্রভাবে মাথা নত করে দেও। বলো হে পালনকর্তা তাদের উভয়ের প্রতি রহম করো। যেমন তারা আমাকে শৈশবে লালন পালন করেছে।
(সূরা বনী ঈসরাইল আয়াত ২৩ ও ২৪)
রাসূল সা. হাদিসে পিতা মাতার প্রতি সদ্ব্যবহারের আদেশ করে বলেছেন ” পিতা মাতা তোমার জান্নাত বা জাহান্নাম। ” (বুখারী মুসলিম)
অর্থাৎ পিতা মাতার সাথে সদ্ব্যবহার করলে জান্নাত অর্জিত হবে। আর খারাপ ব্যবহার করলে জাহান্নামে পতিত হবে।
মোটকথা হলো বহু আয়াত ও হাদীসে পিতা মাতার প্রতি সদ্ব্যবহার করার জোর তাগিদ দেওয়া হয়েছে। কোথাও বলা হয়েছে আল্লাহর সন্তুষ্টি পিতা মাতার সন্তুষ্টির মধ্যে এবং আল্লাহর অসন্তুষ্টি পিতা মাতার অসন্তুষ্টির মধ্যে নিহিত রয়েছে।
আবার কোথাও বলা হয়েছে মায়ের পায়ের নিচে সন্তানের বেহেশত।
তাই আমরা যদি দুনিয়ায় কামিয়াবি আর আখেরাতে মুক্তি চাই, তা হলে অবশ্যই পিতা মাতার অধিকার সম্পর্কে সতর্ক থাকতে হবে। তাদের প্রতি আমাদের কর্তব্যকে যথাযথভাবে পালন করতে হবে।
সবশেষে মহান আল্লাহ তায়ালার দরবারে দুয়া করি, তিনি যেন আমাদেরকে পিতা মাতার খেদমতের মাধ্যমে তার সন্তুষ্টি অর্জনের তাওফীক দেন। আমিন।