দিনাজপুরে বোনের ধর্ষণের বিচার চাইতে গিয়ে ধর্ষণ মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে খোদ ধর্ষিতার ভাইকে। ধর্ষিতা ও তার পরিবারকে নানা হয়রানি করারও অভিযোগ উঠেছে মামলার তদন্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। এ অবস্থায় ধর্ষণের বিচার না পাওয়ায় শঙ্কার পাশাপাশি চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন নির্যাতিতা ও তার পরিবার। তবে মামলাটি তদন্তাধীন জানিয়ে ভুক্তভোগী পরিবারের অভিযোগের বিষয়ে কোনো কথা বলেনি থানার ওসি।
দিনাজপুরে বোচাগঞ্জে দুই বছর আগে এক কিশোরীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে প্রতিবেশির পরিতোষ চন্দ্র দেবের। স্বজনদের অভিযোগ, ২০১৬ সালের ২ ডিসেম্বর বাড়িতে একা পেয়ে ধর্ষণ করে পরিতোষ। এরপর বেশ কয়েকবার তাকে ধর্ষণ করা হয়। এতে সে গর্ভবতী হয়ে পড়লে বিষয়টি জানা জানি হয়। এই ঘটনায় বোচাগঞ্জ থানায় মামলা করতে চাইলে তা নিতে টানবাহানা করে পুলিশ। পরে গত বছর ৫ মে জেলা নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইবুনালে মামলা করেন তার বাবা। এরপর গত ২৮ জানুয়ারি নির্যাতিতা ও তার পরিবারকে দেখা করতে বলেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা তালেব। তাদের অভিযোগ দীর্ঘক্ষণ বসিয়ে রেখে মামলা প্রত্যাহারের জন্য চাপ দেয়া হয়। তাতে রাজি না হওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে ধর্ষিতার ভাই প্রদীপ চন্দ দেবকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
নির্যাতিতা বলেন, ‘পরিতোষ আমাকে বলে আমি তোমাকে বিয়ে করবো না। আমার বিয়ে ঠিক হয়েছে। পুলিশ আমার ভাইকে ধরে নিয়ে গেছে। আমি এ ঘটনার বিচার চাই। নির্যাতিতার বাবা বলেন, ‘পুলিশ তাদের পক্ষ থেকে টাকা খেয়ে আমার বিপক্ষে কাজ করছে। আমাদের পক্ষে কোনো কাজ করছে না। ওই নির্যাতিতা মা বলেন, ‘আমার মেয়ের ইজ্জত নষ্ট করেছে। এখন আমার মেয়ে গর্ভবতী হয়ে পড়েছে। আমি এর বিচার চাই। অভিযোগের বিষয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তার কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি। বোচাগঞ্জ থানার ওসি জানান, তদন্তের দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে ভুক্তভোগী পরিবারের বিষয়ে তিনি কোন কথা বলেন নি।
দিনাজপুরের বোচাগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রহিম বলেন, আসামি বিরুদ্ধে ডিএনএ কোন অভিযোগ পাওয়া গেলে সেক্ষেত্রে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়াও তদন্তে যে প্রতিবেদন পাবো পুলিশ সেটা বিজ্ঞ আদালতে দাখিল করা হবে। মামলার মূল অভিযুক্ত গ্রেফতার হলেও এখনো চার্জশীট দেয়নি তদন্ত কর্মকর্তা। এ অবস্থায় নির্যাতিতাকে আইনি সহায়তা দেয়ার কথা জানিয়েছে বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট।