ময়মনসিংহ (ত্রিশাল) সংবাদদাতা:
করোনা ভাইরাসের কারনে সৃষ্ট দূর্যোগকালীন মূহূর্তে রোগিদের চিকিৎসা সেবা দেয়ার জন্য ইন্টার্নশিপে যোগ দিতে নির্দেশ দেয়ার পরও যোগ না দেয়ায় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের এমবিবিএস-৫২ তম ব্যাচের সকল শিক্ষার্থীদেরকে দেশের কোন মেডিকেল কলেজে আর ইন্টার্নর্শিপ করতে না দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে! এর ফলে তাদের ভবিষ্যৎ কর্মজীবন অন্ধকার হয়ে পড়েছে। ইন্টার্নশিপ করতে না পারলে তারা চিকিৎসক হিসেবে কোথাও চাকরি করতে পারবেনা। ফলে তাদের এতদিনের পড়ালেখা কোন কাজেই আসবেনা।
উল্লেখ্য, করোনা ভাইরাসের কারনে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে রোগিদের যথাযথ সেবা দেয়ার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে অধ্যায়নরত এমবিবিএস-৫২ তম ব্যাচের সকল শিক্ষার্থীকে গত ১৪ মার্চ থেকে ২৫ মার্চের ভিতর হাসপাতালে ইন্টার্ন হিসেবে কাজে যোগ দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয় কিন্তু করোনা ভাইরাসের ভয়ে তারা কেউই নির্ধারিত সময়ে কাজে যোগদান করেনি এমনকি কলেজ কর্তৃপক্ষের সাথে কোনরুপ যোগাযোগও করেনি। ফলে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসা সেবায় দেখা দিয়েছে মারাত্বক সংকট। ইন্টার্ন ডাক্তার না থাকায় সেবা দেয়া যাচ্ছেনা রোগিদের, চিকিৎসা না পেয়ে ফেরত যেতে হচ্ছে অনেক রোগিকে। ফলে তাদেরকে নিজের হাসপাতালে ইন্টার্নশিপ করতে না দেয়ার পাশাপাশি ভবিষ্যৎতে আর কোনদিন দেশের কোথাও ইন্টার্নশিপ করতে না দিতে স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়, মন্ত্রনালয়ের প্রশাসনিক সচিব, র্যাব, ডিজিএফআই, চিকিৎসা শিক্ষা ও স্বাস্থ্য জনশক্তি উন্নয়ন বিভাগের পরিচালক সহ সরকারের বিভিন্ন দফতরে চিঠি দিয়ে জানিয়ে দিয়েছেন ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাছির উদ্দীন আহমেদ। এপ্রিলের ২ তারিখে “অতি জরুরী” সিল সহ বিভিন্ন দফতরে চিঠিটি পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। ফলে এসব শিক্ষার্থীরা দেশের কোন হাসপাতালে আর কোনদিন চিকিৎসক হিসেবে যোগ দিতে পারবেনা। চিরদিনের মতো বন্ধ হয়ে যাচ্ছ তাদের ডাক্তার হওয়ার সুযোগ।
(কেন এত কঠিন সিদ্ধান্ত?)
জানতে চাইলে, ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাছির উদ্দীন আহমেদ বলেন চিকিৎসকদের কাজই হলো রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করা। কখনো সে লড়াই সহজ আবার কখনো কঠিন হতে পারে। সুখের সময়ে যেমন সবাই সুবিধা নেয় তেমনি বিপদের সময়ে সুবিধা দিতে হয়। কিন্তু কঠিন সময়ে যারা পালিয়ে যায় তাদেরকে আমাদের প্রয়োজন নেই। এরা এতদিন এই মেডিকেল কলেজে পড়ালেখা করেছে কিন্তু এখন বিপদের মূর্হূর্তে রোগিদের ফেলে রেখে চলে গেছে। এটা মানবতাবিরোধি অপরাধ। জনগনের করের টাকায় পড়ালেখা করে ডাক্তার হয়ে এরা সামাজিক মর্যাদা ও অর্থের নিশ্চয়তা ভোগ করবে কিন্তু সুসময়ে পাশে থাকবে আর বিপদে পালিয়ে যাবে এমন চিকিৎসক আমাদের প্রয়োজন নেই। এরা চিকিৎসক হলে মানুষের কল্যানে কাজে লাগবেনা। এমন নীতিহীন ছাত্রদের ডাক্তার বানিয়ে কি লাভ? তাই আমি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
