নিজস্ব প্রতিবেদক,
চট্টগ্রাম টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমেছে পুলিশ,নিরাপত্তার স্বার্থে বাসায় থাকুন।এমন প্রচারনায় সােস্যাল মিডিয়া অফলাইন অনলাইন সবখানে সয়লাব।করােনার আতংকে মানুষকে ঘরে রাখতে গত ২ দিন ধরে বেধড়ক পেটাচ্ছে পুলিশ।যাকে তাকে যেখানে সেখানে পেটাচ্ছে।এমনকি,এই মার ও রূঢ় আচরন থেকে রেহাই পাচ্ছেন না ডাক্তার কিংবা সাংবাদিক।
রিকশাওয়ালা,নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া মানুষ,অসুস্থ রােগীও মার খেয়েছেন। তাদের অপরাধ ঘরের বাহিরে থাকা। পুলিশের এই বর্বরােচিত আচরণকে অনেকেই উৎসাহ দিচ্ছেন। বুধবার রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় বিশ্বরােডে চলন্ত মােটরসাইকেলে চালক, যাত্রীদের উপর অতর্কিত হামলা চালিয়েছে পুলিশ। দেশের বিভিন্ন স্থানেও পুলিশের মারমুখী হামলার ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ যেনাে ভুলে গেছে,তারা জনগনের সেবক, রাষ্ট্রের বেতনভুক্ত কর্মচারী।রাজবাড়ির পাংশা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডিউটি থেকে বাসায় ফেরার পথে এক সরকারী ডাক্তারকে পিটিয়েছে পুলিশ। পেশাগত কাজ সেরে হাসপাতাল থেকে ফিরছিলেন বলার পরেও ওই ডাক্তারকে পিটিয়েছেন,পাংশা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ আহসান উল্লাহ নিজেই। একই ধরনের ঘটনা ঘটেছে চট্টগ্রামের ফিসারীঘাটেও।এখানে কেবল ডাক্তারের বদলে হয়েছেন সাংবাদিক।পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় স্থানীয় কোতোয়ালি থানার রণেশ বড়ুয়া নামের এক এস আই দৈনিক অন্যদিগন্ত পত্রিকার চট্টগ্রাম বিভাগীয় ব্যুরো চীফ সাহেদুল ইসলাম সাগরের সাথে যথেচ্ছ ব্যবহার করেছে।সাংবাদিক পরিচয় দেওয়ার পরও পাত্তা দেয়নি।উল্টো নিজের মুখে থাকা মাস্ক খুলে হুমকি দিয়ে বলেছে,”আমাকে চিনিস তুই?।” ভাবতেই ভয় লাগে যে,রাষ্ট্রযন্ত্রের এমন রুঢ় ও পৈশাচিক আচরনে সাধারণ মানুষজনের কপালে কি লিখা আছে।করােনা মােকাবেলায় ঘরে থাকার পরামর্শ দিয়েছে সরকার।প্রয়ােজনীয় কাজ ছাড়া বাহিরে যাওয়া নিষেধ করা হয়েছে।কিন্ত রাস্তাঘাটে যাকে
যাকে পাচ্ছে,তাকেই কেনাে পেটাচ্ছে পুলিশ?এটি কেমন আচরণ? এমন বর্বরতার কারনটাই কি?জনগনকে রাস্তায় পেলে এভাবে পেটানাের ক্ষমতা পুলিশকে দেয়া হয়নি। সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখতে জেল জরিমানা দেন। তারপরও পুলিশ দিয়ে জনগন পেটানাে সম্পূর্ন অবৈধ।অনেকেই মন্তব্য করেছেন,জনগনকে পিটাইতে পুলিশকে উৎসাহিত করবেন না। এটা বর্বরতা।করােনা মােকাবেলায় পর্যাপ্ত চিকিৎসা সরঞ্জাম নাই।। এখনাে জেলা শহর তাে দূরের কথা বিভাগীয় শহরগুলােতে পর্যন্ত করােনা টেস্টের ব্যবস্থা হয় নাই। কিন্তু দেশের বিভিন্ন জায়গায় পুলিশ দিয়া জনগণকে হেনস্তা শুরু হয়ে গেছে। এটারে বলে ‘ভাত দেওয়ার মুরােদ নাই, কিল মারার গােসাই’।কেউ অকারণে বাইরে বের হইলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে পুলিশকে উৎসাহিত করা যায়।কিন্ত,ডাক্তার-সাংবাদিক এদেরকে তো এই জরুরী মুহুর্তে দেশের বড় প্রয়োজন। সেই প্রয়োজন পেটোয়া পুলিশ বাহিনীর চাইতে বেশী। তারপরেও,যারা বাইরে বের হন তাদেরকে পিটানোর আগে কারন জিজ্ঞাসা করে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযােগ দিতে হবে। মাইরের উপর ঔষধ নাই, পুলিশের উপর ডাক্তার নাই’ এসব মূর্খ চিন্তা ভাবনা দেশের এই ক্রান্তিলগ্নে বড়ই মূর্খতার পরিচয়।
জনগনের সেবক হয়ে উল্টো সেই জনগণের সাথে বর্বর আচরন সত্যি বেদনাদায়ক। এই দুর্দিনে আত্মীয়-স্বজনদের খোঁজখবর নিতে হবে মানুষের। কিছু সংখ্যক রিকশা চালক অবশ্যই বাইরে থাকতে হবে। এরা করােনা আক্রান্ত রােগীকেও রিকশায় তুলতে ভয় পায়না। এই দেশের কোটি কোটি মানুষ দিনে আনে দিনে খায়, তাদের খাওয়ানাের দায়িত্ব কেউ নেয় নাই। বহু ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদেরও দুই মাস বইসা খাওয়ার সঙ্গতি নাই। তাদেরকে দোকান খােলা রাখার একটা গাইড লাইন দিতে হবে।জাতীর এই দূর্দিনে ডাক্তার-সাংবাদিকদের যেখানে মূখ্য ভূমিকা পালনের কথা,সেখানে তাদের উপর লাঠিয়াল বাহিনীর ন্যায় আচরন করে পুলিশ কি বোঝাতে চাইছেন তা বোঝা মুশকিল। আশা করি পুলিশ এইসব বিষয়ে তাদের সঠিক ও যথাযথ ভূমিকা পালন করবে।