মোঃ শাহাবুদ্দীন আহমেদ কমলগঞ্জ প্রতিনিধি ঃ
সিলেট বিভাগের মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার রাজকান্দি রিজার্ভ ফরেস্টের কুরমা বনবিটের গহিন অরণ্যঘেরা দুর্গম পাহাড়ী এলাকায় রযেছে অপূর্ব এই জলপ্রপাত।
এডভেঞ্চার প্রিয় পর্যটক যারা চ্যালেঞ্জ নিতে পছন্দ করেন কেবল তাদের জন্যই এই ঝর্না দর্শন। সরকারী কোন উদ্যোগ না থাকায় উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা নেই সেখানে।
কেবলমাত্র দৃষ্টিনন্দন ঝর্না নয় পথের দুপাশের রিজার্ভ ফরেস্টের গাছের সজ্জা দৃষ্টি কেড়ে নেবে অনায়েসে। জারুল, চাপালিশ ও কদম গাছের ফাঁকে ফাঁকে রঙিন ডানা মেলে দেয় হাজারো প্রজাপতি।
চশমা বানরের আনাগোনা ডুমুর গাছের চারদিকে গাছগাছালি ও প্রাকৃতিক বাঁশবনে ভরপুর এ বনাঞ্চল। ডলু, মুলি, মিটিংগা, কালি ইত্যাদি অদ্ভুত নামের বিভিন্ন প্রজাতির বাঁশ এ বাগানগুলোকে দিয়েছে ভিন্ন একরূপ
পাথুরে পাহাড়ের ঝিরি পথে হেঁটে যেতে যেতে সুমধুর পাখির কলরব আপনার মনকে অনুভূতিতে ভরিয়ে দেবে।
দূর থেকে কানে ভেসে আসবে বিপন্ন বনমানুষের ডাক। কিছুদূর এগিয়ে যাওয়ার পর শুরুতে আপনার দু’চোখের সামনে ভেসে উঠবে পাহাড় থেকে ধোঁয়ার মতো ঘন কুয়াশা ভেসে উঠার অপূর্ব দৃশ্য।
মনে হবে যেন ওই নয়নাভিরাম পাহাড় আপনাকে হাতছানি দিয়ে ডাকছে। এভাবেই হাটতে হাটতে একসময় আপনি পৌঁছে যাবেন আপনার কাঙ্খিত হামহাম জলপ্রপাতের খুব কাছাকাছি।
কিছু দূর এগুলেই শুনতে পাবেন হামহাম জলপ্রপাতের শব্দ। কাছে গিয়ে দেখতে পাবেন প্রায় ১৬০ ফিট ওপর হতে আসা জলপ্রপাতের সেই অপূর্ব দৃশ্য ।
প্রবল ধারায় উপর হতে গড়িয়ে পরছে ঝর্নার পানি নিচে থাকা পাথরের উপর। পাথরের আঘাতে জলকনা বাতাসে মিলিয়ে গিয়ে তৈরি হচ্ছে কুয়াশা।
চারিদিকে এক শীতল শান্ত পরিবেশ। ডানে বামে চোখ ফেরানোর উপায় নেই। কেবলই ইচ্ছে করবে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকি সৃষ্টিকর্তার এই অনন্য সৃষ্টির নিদর্শন কাঁচের মত স্বচ্ছ পানি পাহাড়ের শরীর বেঁয়ে আছড়ে পড়ছে বড় বড় পাথরের গায়ে,
গুড়ি গুড়ি জলকনা আকাশের দিকে উড়ে গিয়ে তৈরি করছে কুয়াশার আভা। বুনোপাহাড়ের দেড়শ ফুট উপর হতে গড়িয়ে পড়া স্রোতধারা কলকল শব্দ করে এগিয়ে যাচ্ছে পাথরের পর পাথর কেটে সামনের দিকে তার গন্তব্যে।
চারিধিকে গাছ গাছালি আর নাম না জানা হাজারো প্রজাতীর লাল লতা পাতা গুল্মে আচ্ছাদিত হয়ে আছে পাহাড়ী শরীর।
স্রোতধারা সে লতাগুল্মকে ভেদ করে গড়িয়ে পড়ছে ভুমিতে। তৈরি করছে স্রোতস্বিনী জলধারা। সে যে কি এক বুনোপরিবেশ না দেখলে কাউকে বিশ্বাস করানো অসম্ভব।