জুরাইন প্রেসক্লাব থেকে: রাজধানীর জুরাইন থেকে বাবুবাজার রোডে দীর্ঘদিন যাবৎ লাগামহীন ভাবে চলছে ফিটনেসবিহীন লক্কর ঝক্কর বাহাদুর শাহ পরিবহনের বাস। এ পরিবহনের বাসে লাগেনা কোন ধরনের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র।
অবৈধভাবে জুরাইনের নতুন রাস্তায় মাজার গেটের বিপরীতে পাশ দখল করে সারিবদ্ধ ভাবে রেখেছে বাহাদুর শাহ পরিবহনের গাড়ী। বাহাদুর শাহ গাড়ীর অবৈধ পার্কিংয়ের কারনে প্রতিদিন যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। এই যানজটের কারনে সাধারন মানুষে ভোগান্তির শেষ নেই।
সিটিং ভাড়া নিয়ে সম্পূর্ণ বাসে দাঁড় করিয়ে যাত্রী নিয়ে আসে এই লক্কর ঝক্কর দুরন্ত বাস। এ রুটে এর বিকল্প কোন ভালো পরিবহন না থাকায় এই ভাঙা বাসে উঠে আসতে বাধ্য হচ্ছে যাত্রীরা।
এ রুটে চলাচালকারী বিভিন্ন স্কুল কলেজের ছাত্র-ছাত্রীরা জানায়, এই বাস এখনি বন্ধ না করলে ভয়াবহ দূর্ঘটনা ঘটতে পারে। সাধারন ছাত্র-ছাত্রীরা ঢাকা ৪ আসনের মাননীয় সংসদ সদস্য সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, শ্যামপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও বিআরটিএ কর্তৃপক্ষের কাছে দাবী জানিয়েছে, এই লক্কর ঝক্কর পরিবহণ থেকে জীবন বাঁচাতে।
যাত্রীদের অভিযোগ, বাহাদুর শাহ পরিবহন মানুষ মারার জমে পরিনত হয়েছে। এ পরিবহনের গাড়ীগুলোর মান খুবই খারাপ। একদিকে ফিটনেসহীন অপর দিকে অদক্ষ চালকরা বেপরোয়া ভাবে গাড়ী চালাতে গিয়ে প্রতিনিয়তই দুর্ঘটনা ঘটাচ্ছে।
এতে জীবন দিতে হচ্ছে যাত্রী ও পথচারীদের। গত বছরের শেষ দিন ৩১ ডিসেম্বর বেলা এগারটার দিকে এমনই এক দুর্ঘটনায় বাহাদুরশাহ পরিবহনের গাড়ি উল্টে জুরাইনের আলমবাগ এর ২৫ বছর বয়সী হুমায়ূনের মৃত্যু হয়। লক্কর-ঝক্কর এসব গাড়ী যেখানে সেখানেই বিকল হয়ে পড়ছে। এতে একদিকে যাত্রীদের দুর্ভোগ আরেক দিকে সৃষ্টি হচ্ছে যানজট। তাছাড়া এ পরিবহন সিটিং সার্ভিস হিসেবে ভাড়া আদায় করলেও যেখানে সেখানে যাত্রী উঠা-নামা করছে। এতে ভাড়া নিয়েও যাত্রীদের সাথে চালক-হেলপারদের বাক-বিতন্ডা হচ্ছে।
১২ সিটের গাড়ীকে বানানো হয়েছে ২৫ সিটের। সিটিং সার্ভিস বলে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করলেও যাত্রীদের আসা যাওয়া করতে হচ্ছে দাঁড়িয়ে। নিয়ম বহির্ভূত সিট বৃদ্ধি করার কারণে যাত্রীদের বসতে অসুবিধা হচ্ছে।
দু,জনের সিটে গাদাগাদি করে বসতে বাধ্য করা হচ্ছে তিন জনকে। চালক হেলপাররা অতিরিক্ত আয় করতে যাত্রী দুর্ভোগের পন্থা অবলম্বন করছে। বাহাদুর শাহ পরিবহন মানুষ মারার জম জেনেও প্রয়োজনের তাগিদে যাত্রীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে নিরুপায় হয়ে। এত অনিয়ম থাকার পরেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এ পরিবহনের বিরুদ্ধে আইনগত প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা গ্রহন করছেনা বলে যাত্রীসাধরণের অভিযোগ।
যাত্রীদের অভিযোগ থেকে জানা যায়, জুরাইন হতে বাবুবাজার পর্যন্ত চলাচলরত ৭০ টি বাহাদুর শাহ পরিবহনের প্রায় ৯৫ শতাংশ চালকেরই কোনো লাইসেন্স নেই। এছাড়াও এ গাড়িগুলোর ফিটনেস নেই বলেও জানা যায়। তারমধ্যে অধিকাংশ চালকই মাদকাসক্ত। মাদক সেবন করেই এরা গাড়ি চালাচ্ছে। যার কারণে অহরহ দুর্ঘটনা ঘটাচ্ছে তারা।
শুধু তাই নয়, গাড়ি চালানোর সময় মোবাইলে কথা বলা নিষিদ্ধ থাকলেও তারা সে আইন মানছে না। একহাতে ড্রাইভিং হুইল ধরে আরেক হাতে মোবাইল ফোন কানে ধরে গাড়ি চালাচ্ছে। যাত্রীরা এসব নিয়ে প্রতিবাদ করলে উল্টো যাত্রীদের সাথে অশোভন আচরণে লিপ্ত হচ্ছে চালকেরা।
পাশাপাশি চালকেরা নিজস্ব বন্ধুবান্ধব নিজেদের পাশে বসিয়ে হাসি-ঠাট্টা করতে করতে গাড়ি চালিয়ে থাকে। যার জন্য দুর্ঘটনার স্বীকার হচ্ছে মানুষ।