
মোঃ মোশফিকুর ইসলাম নীলফামারী
নীলফামারীর চিলাহাটী-হলদিবাড়ী সীমান্তে রেল যোগাযোগ স্থাপনের মধ্য দিয়ে দীর্ঘ ৫৪ বছর পর বাংলাদেশের সাথে ভারতের রেল যোগাযোগ পূনঃপ্রতিষ্ঠা হতে যাচ্ছে। ভারতের সাথে রেল যোগাযোগের পাশাপাশি চিলাহাটীতে স্থলবন্দর প্রতিষ্ঠার দাবী আজও উপেক্ষিত। ভারতের হলদিবাড়ী থেকে ডাঙ্গাপাড়া পর্যন্ত ৪.৩৪ কিলোমিটার রেলপথ নির্মান কাজ ইতোমধ্যে শেষ করে ট্রায়াল ট্রেনও চালিয়েছে ভারত। কিন্তু বাংলাদেশ অংশের পোনে ৭ কিলোমিটারের রেলপথ নির্মাণের কাজ চলছে ধীরগতিতে। এতে নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ না হওয়ার আশঙ্কা স্থানীয়দের। ১৯৬৫ সালে পাক-ভারত যুদ্ধের সময় চিলাহাটী থেকে হলদিবাড়ী পর্যন্ত প্রায় ১২ কিলোমিটার রেলপথ তুলে ফেলা হয়। বন্ধ হয়ে যায় রেলপথে যোগাযোগ। দুই দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে সুদৃঢ় করতে নেয়া হয় রেল যোগাযোগের উদ্যোগ। বাংলাদেশ অংশে চিলাহাটী থেকে ডাঙ্গাপড়া পর্যন্ত ৬.৭২৪ কিলোমিটার রেলপথ স্থাপনে বরাদ্দ দেয়া হয় ৮০ কোটি ১৬ লাখ ৯৪ হাজার টাকা। এ অর্থে রেলপথ বসানোর পাশাপাশি নির্মাণ করা হবে ইমিগ্রেশন ও কাষ্টমস অফিস। ২০২০ইং সালের জুন মাসের মধ্যে চিলাহাটী-হলদিবাড়ি রেলপথে ট্রেন চালানোর উদ্বোধন দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী এক ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে করার ঘোষনা দেয়া হলেও তা অনেকটাই অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। বাংলাদেশ অংশের কাজ ধীরগতিতে চলার কারনে অগ্রগতি হয়েছে মাত্র ২৫ ভাগ। চিলাহাটী সীমান্ত পথে এ রেলপথটি চালু হলে বিশেষ করে উত্তরাঞ্চলের মানুষ অনায়াসে স্বল্প খরচে হয়রানী ছাড়াই ভারতে যাতায়াত করতে পারেবন। এতে দুই দেশের নাগরিকদের যাতায়াতে যোগ হবে নতুন মাত্রা। সীমান্ত ইউনিয়ন ভোগডাবুড়ির তোজাম্মেল হোসেন মঞ্জু, আশরাফ আলী, সোহরাব হোসেনসহ আরও অনেকে জানান, হলদিবাড়ী থেকে ডাঙ্গাপাড়া পর্যন্ত ভারত কর্তৃপক্ষ প্রায় দেড় বছর আগে তাদের অংশর কাজ শেষ করেছে। নতুন ভাবে নির্মিত রেলপথে তারা চালিয়েছে ট্রায়াল ট্রেন। কিন্তু বাংলাদেশ অংশে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠাণ অত্যান্ত ধীরগতিতে কাজ করছে। রেল কর্তৃপক্ষের সঠিক তদারকীর অভাবে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠাণ নিজ খেয়াল খুশিমতো কাজ করে যাচ্ছে। যার কারনে কাজের অগ্রগতি হতাশাব্যাঞ্জক। চিলাহাটী রেলওয়ে স্টেশন মাষ্টার আশরাফুল ইসলাম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠাণের কাজের গতি অত্যান্ত হতাশাব্যাঞ্জক। এ পর্যন্ত তারা মাত্র ২৫ ভাগ কাজ করতে পেরেছে। রেলপথে ব্রীজ নির্মাণের কাজও শুরু করতে পারেনি। শুধুমাত্র মাটির কাজ করে যাচ্ছে। রেলপথ মন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন বলেন, দুই দেশের বন্ধুত্বপুর্ণ সম্পর্কের সুফল হিসেবে চালু হতে যাচ্ছে চিলাহাটী-হলদিবাড়ী রেলপথ। যা এক সোনালী অধ্যায়ের সুচনা করেছে। আগামী জুন মাসের মধ্যে দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী এক ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এই রেলপথের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন।