সম্পাদকীয়
হঠাৎ করেই অস্বাভাবিক ভাবে বেড়েছে পেঁয়াজের দাম। কিছুদিন আগে যে পেঁয়াজ ৪৫ থেকে ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছিল তা হঠাৎ করে এক লাফেই বেড়ে ৭০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মূল্যবৃদ্ধির জন্য দেখানো হচ্ছে নানা অজুহাত। কিন্তু পেঁয়াজের পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে। তাই দাম বাড়ার বিষয়টি কোনোভাবেই যুক্তিযুক্ত হতে পারে না। এমনিতেই অন্যান্য দ্রব্যমূল্যের দাম নাগালের বাইরে, তার ওপর পেঁয়াজের দাম বাড়ায় সাধারণ ভোক্তাদের কষ্টও বেড়েছে। এসব দেখার কি কেউ নেই?
জানা গেছে, হঠাৎ পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধির কারণ খতিয়ে দেখতে বিশেষ অভিযান পরিচালনার উদ্যোগ নিয়েছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। এ ধরনের অভিযান সারা বছর অব্যাহত রাখা দরকার, যাতে কেউ কারসাজির সুযোগ না পায়।
মৌসুমে কৃষকরা পেঁয়াজের দাম পায় না। অথচ এখন আকাশচুম্বী। এই বর্ধিত টাকাও উৎপাদক কৃষকরা পান না। পেঁয়াজ পচনশীল। এজন্য পেঁয়াজ সংরক্ষণের দিকে মনোযোগী হতে হবে। যাতে সারা বছরই পেঁয়াজের সরবরাহ অব্যাহত রাখা যায়। উৎপাদন এবং সংরক্ষণের দিকে জোর দিতে হবে।
রাজধানীর পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ের বিক্রেতারা জানিয়েছে, ভারতীয় পেঁয়াজের দাম বেশি। এ কারণে দেশের বাজারে সরবরাহ কম এবং দাম বেশি। আমদানিকৃত কোনো পণ্যের দাম বিদেশের বাজারদরের সঙ্গে ওঠানামা করবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু লক্ষ করা যায়, কোনো পণ্যের দাম বিদেশের বাজারে বৃদ্ধির সাথে সাথে দেশের ব্যবসায়ীরা নিজেরাই ঐ পণ্যে দাম বাড়িয়ে দেন।
বিদেশের বাজারে দাম বৃদ্ধির অজুহাতে দেশের বাজারে কেউ অতিরিক্ত মুনাফা লাভের চেষ্টা করছে কিনা তা খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। এ বিষয়ে কারও অপরাধ প্রমাণিত হলে তাকে যথাযথ শাস্তির আওতায় আনতে হবে।
পেঁয়াজসহ নিত্যপণ্যের বাজার এভাবে অস্থির হলে ভোক্তারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধিতে হতদরিদ্র মানুষ দিশেহারা হয়ে পড়ে। কাজেই নিত্যপণ্যের বাজারের অস্থিরতা দূর করার জন্য সময়মতো পদক্ষেপ নিতে হবে। অবিলম্বে পেঁয়াজের মূল্য জনসাধারণের নাগালের মধ্যে নিয়ে আসতে যার যা করণীয় রয়েছে সেটি করতে হবে। এজন্য সরকার এবং ব্যবসায়ী সব পক্ষকেই এগিয়ে আসতে হবে।