খোদ রাজধানীর জুরাইনে প্রশাসনের নাকের ডগায় কোন প্রকার অনুমোদন ছাড়াই গড়ে উঠেছে মশার কয়েল তৈরির কারখানা। গত বুধবার রাতে জুরাইনের মুরাদ পুর মহল্লায় অবৈধ মশার কয়েল তৈরির এই কারখানার টির সন্ধান পাওয়া গেছে। যেখানে কাজ করছে ১০ থেকে ১৪ বছরের শিশুরা। ‘শিউলী ক্যামিক্যাল ওয়ার্কস’ নামের এ কারখানাটিতে ১০টি ব্যান্ডের নামে কয়েল উৎপাদন করে বাজারজাত করছে। অথচ কোন অনুমোদনই নেই কারখানাটির।
প্রতিটি প্যাকেটের মোড়কে ‘বিএসটিআই’ সিল ব্যবহার করলেও নেই বিএসটিআই-এর কোন অনুমোদন। শিশু শ্রমিকদের দিয়ে মাত্রারিক্ত বিষাক্ত ডি-এলেথ্রিন মিশিয়ে নিম্নমানের উৎপাদিত এইসব কয়েল স্বাস্থ্য ও পরিবেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর হওয়ায় এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছে কারখানাটির আশপাশের বাসিন্দারা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কোন সাইনবোর্ড ছাড়াই কারখানাটিতে বিষাক্ত ডি-এলেথ্রিন মিশিয়ে দিনে ও রাতে মশার কয়েল তৈরি করা হচ্ছে। উৎপাদিত মশার কয়েলের বিষাক্ত গন্ধে শ্বাস প্রশ্বাসে সমস্যা দেখা দিচ্ছে আশেপাশের বাসীন্ধাদের। স্থানীয়দের অভিযোগের প্রেক্ষিতে অনুসন্ধান করে সরজমিনে কারখানাটিতে গিয়ে দেখা যায়, ছোট ছোট শিশুরা কাজ করছে কারখানাটিতে।
শিউলি কেমিক্যালের ওয়ার্কস নামে কারখানাটির নামমাত্র লোকাল কিছু কাগজপত্র দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে
(দরবারে এমদাদিয়া মশার কয়েল, দেশ জাম্বো মশার কয়েল, স্বদেশ মেগা কয়েল, দেশ মেগা কয়েল, এ-সি-সেভেন মশার কয়েল, এছাড়া ও কেমিক্যাল এন্ড কোং লিমিটেডের নামে ভিক্টিম এক্সটা পাওয়ার, বন্ধন কেমিক্যাল এন্ড কোং লিমিটেডের নামে ভিক্টিম এক্সটা পাওয়ার জাম্বু মশার কয়েল ও জব্বার ফুড এন্ড কেমিক্যালের নামে দেশ জাম্বু মশার কয়েল প্যাকেটজাত করা হচ্ছে।
তবে হরেক রকম নাম ও হরেক রকমের কোম্পানির নাম মোড়কে ব্যবহার করলেও তৈরি হচ্ছে সব একই জায়গায়, একই জিনিস দিয়ে। আর প্রতিটি মোড়কে বিএসটিআই-এর সিল লাগানো রয়েছে। সিউলী ক্যামিক্যাল ওয়াস রতিটিক তাজুল হোসেন বলেন, কারখানাটিতে ছোট শিশুরাও কাজ করে।
তিনি চার হাজার টাকা বেতন পান আর শিশুদের বেতন কম। তবে কারখানাটির অনুমোদনের বিষয়ে তিনি কিছু বলতে না পারলেও বিএসটিআইয়ের কোন অনুমোদন নেই, নেই কোন কেমিষ্ট কিংবা ল্যাবরেটরি। নিজেরাই বিষাক্ত ক্যামিকেল দিয়ে কয়েল তৈরি করেন। শিশু শ্রমিক আকাশ জানায়, এখানে কাজ করি বেতন পাই, এছাড়া আর কিছু জানি না। তবে কারখানাটির মালিক মো. বাবুলের সাথে যোগাযোগ করলে
স্থানীয় এলাকাবাসী জানায় এসব কারখানার তৈরি অবৈধ কয়েলের গুনগত মান পরীক্ষা নিরীক্ষা করা হয় না। তাছাড়া বিভিন্ন নামকরা কারখানার কয়েল অবিকল নকল করে বাজারজাত করছে এসব কারখানার মালিক রা । বিভিন্ন মোড়ক তৈরি করে অবৈধ কারখানার মালিকরা তাদের নিজেদের তৈরি কয়েল প্যাকেট করে গোপনে বাজার জাত করছে। অনুমোদিত কয়েলের চেয়ে দাম অনেক কম হয়য়ায় খুচরা বিক্রি তারা অধিক মুনাফার লোভে নকল কয়েল বিক্রি করছে কেতাদের কাছে। ক্যতারা অনুমোদিত কারখানার তৈরি কয়েল মনে করে বেশি দামে অবিকল নকল কয়েল কিনে প্রতারিত হচ্ছে।
এসব নকল কয়েল মানবদেহের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। অবৈধ কারখানার মালিকরা নকল কয়েল তৈরি ও বাজারজাত করে একদিকে কর্তাদের সাথে প্রতারনা করে আথিক ফায়দা লুটছে অপর দিকে জীবন কেও ঠেলে দিচ্ছে হূমকীর মুখে এসব কারখানায় অবৈধ ভাবে গ্যাস ও বিদ্যুৎ লাইনের সংযোগের অভিযোগ রয়েছে। অপরিকল্পিত ভাবে গড়ে উঠা এসব অবৈধ অনুমোদন হীন একাধিক কারখানায় বিভিন্ন সময় আগুন লাগার ঘটনা ও ঘটছে। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর জরূরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছে সচেতন এলাকাবাসীর।