আজকের এইদিনেই পূর্ব পাকিস্তানের ভূখণ্ডে উত্তোলন করা হয় স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম পতাকা। বাঙ্গালিরা নিজের অধিকার আর অস্তিত্বকে পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে তুলে ধরেছিলো বিশ্বের সামনে।হাজার বছরের বাঙালির যে সংগ্রাম তারই চূড়ান্ত একটি পর্যায় হলো আমাদের লাল সবুজের পতাকা। তবে, স্বাধীনতার এতো বছর পরে আজো সেই পতাকার মর্যাদা রক্ষায় নতুন জাগরণ দরকার বলে মনে করছেন মুক্তিসংগ্রামীরা।
সূর্য উঠে, আবার তা অস্তমিত যায়। তবে লাল সবুজের জমিনে যে রক্ত রাঙা সূর্য, তা কখনই অস্তমিত হয় না। একটি স্বাধীন দেশ, আরেকটি পতাকা, বাঙালির ছিল আরাধ্য। পতাকা হাতে স্বাধীন দেশের স্বপ্নে, বিভোর ছিল বাঙালি। ৭১ এর পুরো নয় মাস এই পতাকাই যুগিয়েছে সাহস, দিয়েছে দুর্নিবার অনুপ্রেরণা।
পরিকল্পনা ছিল, ছিল দেশের প্রতি প্রগাঢ় প্রেম। তাইতো পাকিস্তানিদের রক্ত চক্ষু উপেক্ষা করে ১৯৭১ সালের দোসরা মার্চ তৎকালীন ছাত্র নেতাদের ডাকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবনের বটতলায় জড়ো হয় লাখো জনতা। সেই সভায় প্রথমবারের মত লাল সবুজের মাঝে সোনালী মানচিত্র খচিত পতাকা উত্তোলন করা হলে উপস্থিত ছাত্র জনতা স্লোগানে মুখরিত করে তোলে পুরো এলাকা।
তৎকালীন ডাকসু ভিপি আ স ম আব্দুর রব বলেন, ‘আমি পতাকাটা এভাবে মেলে ধরার পর মনে হলো গোটা ঢাকা শহর চিৎকার দিয়ে উঠেছে, পুরো বাঙালি জাতি চিৎকার করে বলছে, ‘জয় বাংলা’। এটা আমি ভাষায় প্রকাশ করতে পারবো না। আমি না হলে এটা হয়তো আরেকজন এই পতাকা উত্তোলণ করতো। এটা বাঙালি জাতির অর্জন।তবে এ সময়ে এসে তৎকালীন ছাত্র নেতারা বলছেন, যে মানসিকতা আর বিশ্বাসকে হৃদয়ে লালন করে বাংলার আকাশে পতাকা উচ্চে তুলেছিলেন, সেই স্বতন্ত্র পতাকার লক্ষ্য অর্জিত হয়নি আজও।
তৎকালীন ছাত্র নেতা নূর এ আলম সিদ্দিকী বলেন, ‘পতাকা একটা জাতি যে কারণে বহন করে সেই জাতির একটা আদর্শ, নীতি, রাজনৈতিক প্রত্যাশা এবং প্রাপ্তির মধ্য থেকে সেটা বেরিয়ে আসে। আমি বলছি, সেটি আজ অবক্ষয়ে নিমজ্জিত। গাঢ়ো সবুজের মাঝে দুপ্রস্থ কাপড়ের তৈরি আমাদের এই জাতীয় পতাকা স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব আর স্বাধিকারের নিদর্শন।তাইতো বিশিষ্টজনরা বলছেন, আগামী প্রজন্মকে গড়ে তুলতে হবে নৈতিকতা দেশের প্রতি ভালবাসা আর অসাম্প্রদায়িক চেতনার ভিত্তিতে। আর তাহলেই তারা গড়ে তুলবে মুক্তিসংগ্রামীদের স্বপ্নের বাংলাদেশ।