সোনালী, রূপালী ও জনতা ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার পদে নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত করে হাইকোর্টের দেয়া আদেশ, স্থগিত করেছেন সুপ্রিম কোর্ট। এর ফলে কাল এ ব্যাংকগুলোর নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হতে কোন বাধা নেই।
এক আবেদনের প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার দুপুরে সুপ্রিম কোর্টের চেম্বার বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন এ আদেশ দেন। গেলো ৭ জানুয়ারি ২৮ জন চাকরিপ্রার্থীর আবেদনের প্রেক্ষিতে সোনালী, রূপালী ও জনতা ব্যাংকের নিয়োগ কার্যক্রমের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেন হাইকোর্ট। পরে এই তিনটি ব্যাংক বাদ দিয়েই ৫টি ব্যাংকের পরীক্ষা নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় ব্যাংকার্স সিলেকশন কমিটি। বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টের চেম্বার আদালতের এমন আদেশে সন্তোষ প্রকাশ করে ব্যাংকার্স সিলেকশন কমিটির সদস্য সচিব মোশাররফ হোসেন সময় সংবাদকে জানান, শুক্রবার ৮টি ব্যাংকের সমন্বিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
গেলো বছর প্রকাশ করা ওই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির ভিত্তিতে নিয়োগ পরীক্ষাসহ পরবর্তী কার্যক্রম পরিচালনা না করতে নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। হাইকোর্টের দেয়া এই আদেশ শর্তসাপেক্ষে ছয় সপ্তাহের জন্য স্থগিত করেছেন চেম্বার বিচারপতি। এ আদেশের ফলে সোনালী, রূপালী ও জনতা ব্যাংকের নিয়োগ পরীক্ষা ১২ জানুয়ারি নির্ধারিত সময়ে হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকার্স সিলেকশন কমিটির সদস্যসচিব ও বাংলাদেশ ব্যাংকের মহাব্যবস্থাপক মোশাররফ হোসেন খান।
মেশাররফ হোসেন খান জানান, তিন ব্যাংকের বিষয়ে হাইকোর্ট যে স্থগিতাদেশ দিয়েছিলেন তা তুলে নিয়ে আট ব্যাংকের পরীক্ষা একত্রে নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এ নিয়ে বিভ্রান্তির কোনো সুযোগ নেই। পরীক্ষা যথা সময়ে অনুষ্ঠিত হবে।’ এ সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি আজকের বাংলাদেশ ব্যাংকের ওয়েব সাইটে পাওয়া যাবে বলেও জানান তিনি। ২০১৬ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি সোনালী ব্যাংকের শূন্য পদে অফিসার ও অফিসার (ক্যাশ) পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেয়।
ওই বছরের ২৬ জুলাই রূপালী ব্যাংক ৪২৩টি শূন্য পদে সিনিয়র অফিসার ও ৩ আগস্ট জনতা ব্যাংক ৭৩৬টি শূন্য পদে অ্যাসিস্ট্যান্ট এক্সিকিউটিভ অফিসার পদের জন্য নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেয়। কিন্তু এসব নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির নিয়োগ পরীক্ষা না নিয়ে, গেলো বছরের ২৩ আগস্ট বাংলাদেশ ব্যাংক ৮টি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের একহাজার ৬৬৩ টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা (সাধারণ) শূন্য পদের জন্য সমন্বিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেয়।
এরপর ২৯ আগস্ট আবার তিন হাজার ৪৩৬টি কর্মকর্তা (সাধারণ) শূন্য পদের জন্য নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেয়। সবশেষ গেলো বছরের ৭ সেপ্টেম্বর দুই হাজার ২৪৬টি কর্মকর্তা (ক্যাশ) শূন্য পদের জন্য নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। এসব নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির ভিত্তিতে ১২ জানুয়ারি ৮ ব্যাংকের নিয়োগ পরীক্ষার দিন ঠিক করা হয়।
কিন্তু ২০১৬ সালের বিজ্ঞপ্তির পর আবেদন করা প্রার্থীদের পরীক্ষা না নিয়ে ২০১৭ সালে আবার নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির দেয়ায় বগুড়ার আসাদুজ্জামান, কুমিল্লার আবু বকরসহ ২৮ জন নিয়োগ পরীক্ষার সার্কুলার বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে রিট করেন। এ রিটের ফলে তিন ব্যাংকের পরীক্ষার কার্যক্রম স্থগিত রাখার নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। হাইকোর্টের এমন নির্দেশ স্থগিত করে আজ (বৃহস্পতিবার) দুপুরে সুপ্রিম কোর্ট পরীক্ষায় কোনো বাধা নেই বলে রায় দেয়।
একসঙ্গে আটটি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে ‘সিনিয়র অফিসার’র ১ হাজার ৬৬৩টি শূন্য পদে নিয়োগের পরীক্ষা ১২ জানুয়ারি হবার তারিখ ঠিক করা হয়। এরই মধ্য বাংলাদেশ ব্যাংক সিলেকশন বোর্ড আসনবিন্যাস প্রকাশ করেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের ওয়েব সাইটে তা পাওয়া যাবে। আগামীকাল শুক্রবার ১২ জানুয়ারি এক ঘণ্টাব্যাপী ১০০ নম্বরের এমসিকিউ পরীক্ষা নেবার কথা। বিকাল ৩.৩০ মিনিটে উক্ত পরীক্ষা শুরু হবে।