যে সমাজে হিংসার প্রসার যত বেশী, সে সমাজে অশান্তি তত বেশী। সমাজে অতক্ষণ যাবত কল্যাণ ও শান্তি বিরাজ করে, যতক্ষণ সেখানে হিংসার প্রসার না ঘটে। আর হিংসার প্রসার ঘটে তখন যখন কোন একজন মানুষ যেকোন একটি কাজ করার ফলে বেশ সুনাম কুড়িয়েছে,আর এটা দেখার পর দ্বিতীয় কোন ব্যাক্তি যদি সহ্য করতে না পেরে তার বিরুদ্ধে উঠে-পড়ে লেগে যায়, কুৎসা রটায় বা তার ক্ষতি করার চেষ্টা করে। স্বাভাবিক অর্থে সেটি হচ্ছে প্রতিহিংসা। হিংসা ও প্রতিহিংসার পশু প্রবৃত্তিকে উসকিয়ে দিয়ে শয়তান মানুষে মানুষে বিভেদ সৃষ্টির মাধ্যমে পৃথিবীকে অগ্নিকুন্ডে পরিণত করে। মহান আল্লাহ বলেন, ‘তোমাদের ভালো কিছু হলে তারা কষ্ট পায় আর তোমাদের কোনো বিপদ দেখলে তারা আনন্দিত হয়। (এমন পরিস্থিতিতে) তোমরা অবশ্যই ধৈর্যের সঙ্গে এবং তাকওয়ার সঙ্গে কাজ করবে। তাহলে তাদের ষড়যন্ত্র তোমাদের কোনো ক্ষতি করতে পারবে না। (সূরা আলে ইমরান : ১২০)। অন্যের ভালো দেখে অন্তর্জ্বালায় ভোগা হচ্ছে মুনাফিকের চরিত্র। আর এমন পরিবেশে আমাদের সবার একমাত্র কর্তব্য হলো ধৈর্য অবলম্বন করা। ইংরেজীতে একটা প্রবাদ আছে Tit for tat ‘আঘাতের বদলে আঘাত’। এটি মানুষের স্বাভাবিক মন্দ প্রবণতা। এর বিপরীত হ’ল Mercy for tat ‘আঘাতের বদলে ক্ষমা’। প্রথমটির পরিণতিতে বিশ্বযুদ্ধগুলি ছাড়াও অন্যান্য বড় বড় যুদ্ধগুলি হয়েছে এবং এখনও হচ্ছে। আর দ্বিতীয়টির দৃষ্টান্ত রয়েছে মক্কা ।হিংসা-প্রতিহিংসা কখনো মঙ্গল বয়ে আনতে পারে না, অতএব এখান থেকে আমাদের বেরিয়ে আসা দরকার,অন্যথায় কঠিন সব মুহুর্তের সম্মুখীন হতে হবে। নিজেকে নৈতিকভাবে সমৃদ্ধ করে,হিংসা-বিদ্বেষকে বনবাসে দিয়ে,নিজের মননকে পরিশুদ্ধ করে, সামাজিকভাবে সকলকে সচেতন করে এবং নিজের যোগ্যতার প্রতি সম্মান রেখে সামনে এগিয়ে চলার মানসিকতার নিমিত্তে কিছুটা হলেও সম্ভব প্রতিহিংসা দূর করা। আসুন এবার সকলে আরও একটু সজাগ হয়ে দূর করি ভয়ংকর এই ব্যাধি।
সম্পাদকঃ মোঃ বাদশাহ দেওয়ান +8801911155151