মৌলভীবাজারে জোড়া খুন এখনো মূল আসামি ধরা পড়েনি
December 24, 2017
অপরাধ, আইন ও আদালত, জাতীয়, নারী ও শিশু, প্রচ্ছদ, সারা বাংলা
106 Views
মৌলভীবাজারে জোড়া খুনের ঘটনার সন্দেহভাজন মূল আসামিরা ধরা না পড়ায় নিহত দুই ছাত্রের পরিবারে হতাশা বিরাজ করছে। নিহত কলেজছাত্র ও ছাত্রলীগকর্মী মোহাম্মদ আলী সাবাবের পরিবারের পক্ষ থেকে প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ে দেখা করে সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানানো হয়েছে। নিহত অপর স্কুলছাত্র নাহিদ আহমদ মাহীর পরিবারের পক্ষ থেকে এখনো মামলা করা হয়নি। এ পর্যন্ত তিন সন্দেহভাজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
৭ ডিসেম্বর সন্ধ্যার পর মৌলভীবাজার সরকারি উচ্চবিদ্যালয় ছাত্রাবাসের ফটকের সামনে প্রতিপক্ষের হামলায় নিহত হন মৌলভীবাজার সরকারি কলেজের স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র মোহাম্মদ আলী এবং মৌলভীবাজার সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থী নাহিদ আহমদ।
এ ঘটনার দুদিন পর মোহাম্মদ আলীর মা সেলিনা রহমান চৌধুরী বাদী হয়ে মৌলভীবাজার সদর মডেল থানায় ১২ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা আরও ৬-৭ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেছেন। পুলিশ মামলার এজাহারভুক্ত ৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।
ঘটনার ১৭ দিন অতিক্রান্ত হলেও মূল আসামিরা ধরা পড়েনি। মোহাম্মদ আলীর মা সেলিনা ও বাবা আবু বকর সিদ্দিকী ১৭ ডিসেম্বর জেলা প্রশাসক তোফায়েল ইসলামের সঙ্গে দেখা করে আসামিদের গ্রেপ্তার ও সুষ্ঠু বিচার দাবি করেছেন।
বিভিন্ন সূত্রের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ছাত্রলীগের নেতৃত্ব নিয়ে বছরখানেক ধরে মামলার ১ নম্বর আসামি ছাত্রলীগকর্মী আনিসুল ইসলাম তুষারের সঙ্গে মোহাম্মদ আলীর দ্বন্দ্ব চলছিল। স্কুল কমিটি নিয়েও তাঁদের মধ্যে দ্বন্দ্ব ছিল। মোহাম্মদ আলীর বাবা বলেন, ‘স্কুলের ছেলেরা দল বেঁধে সাবাবের কাছে আসত দেখতাম। শুনেছি ঘটনার এক সপ্তাহ আগে তুষারের একটা ছেলে মার খেয়েছে। আপস-মীমাংসার জন্য সাবাবকে সেদিন (ঘটনার দিন) ঘটনাস্থলে ডেকে নেওয়া হয়েছিল।’
নিহত স্কুলছাত্র নাহিদ আহমদের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা করা হয়নি। নাহিদের মামা গোলাম ইমরান আলী বলেন, ‘এখনো মামলা করিনি। তা ছাড়া দুই মামলারই তো একই আসামি হবে। সবাই আশ্বাস দিচ্ছেন। কিন্তু আসামিরা ধরা পড়ছে না। আমরা হতাশ। আমরা অবস্থা পর্যবেক্ষণ করছি। তবে মামলা করব।’
এই জোড়া খুনের পর ছাত্রলীগ জেলা কমিটির সভাপতি আসাদুজ্জামান রনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাঁর বক্তব্যে বলেছেন, ‘নিহতরা ছাত্রলীগের কোনো কমিটির নেতা বা সদস্য নয়। হওয়ার কথাও নয়। কারণ, তারা সরকারি কলেজ ও সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের ছাত্র। সেখানে ছাত্রলীগের কোনো কমিটি নেই।’
তবে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুর রহমান প্রথম আলোকে বলেছেন, মোহাম্মদ আলী ছাত্রলীগের কর্মী ছিলেন। কিন্তু নাহিদ আহমদ স্কুলছাত্র, ছাত্রলীগের কর্মী না।
মৌলভীবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুহেল আহাম্মদ জানিয়েছেন, নিহত নাহিদ ঘটনার চার-পাঁচ দিন আগে তুষারের লোক এজাহারভুক্ত শেষ আসামি ফাহিম মুনতাসিরকে মারধর করে। এ বিষয়টির আপস-মীমাংসা নিয়ে মাঠের মধ্যে তারা বসেছিল। এরপর ঘটনাটি ঘটে। দলের ভেতরে অভ্যন্তরীণ নিয়ন্ত্রণ ও স্কুল কমিটি গঠন নিয়ে তাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব ছিল।
মামলার সর্বশেষ অবস্থা সম্পর্কে ওসি বলেন, দেশের বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চলছে। পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাহ জালাল আশা করেন, শিগগিরই মূল আসামি ধরা পড়বে।