মোঃ মঈন উদ্দীন চিশতী, দিনাজপুর প্রতিনিধিঃ
দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলার মন্ডলপাড়ার মৃত নুরুল হকের স্ত্রী মোছা. জবেদা বেওয়াকে (৬৫) ছেলে, ছেলের স্ত্রী এবং শ্যালিকা দ্বারা মারপিট করে বাড়ি থেকে বের করে দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। সেই সাথে মা’য়ের ঘরে ভেতর থেকে ছিটকিনি লাগিয়ে দিয়ে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে নিজের সন্তান!
৩ মার্চ ২০২০ ইং রোজ মঙ্গলবার জবেদা বেওয়া তার ছেলে মো. আব্দুল সালাম (৪০) ছেলের স্ত্রী মোছা. শাহিদা বেগম (৩৫) ও শ্যালিকা মোছা. হাবিবা খাতুন (৩৮) এর বিরুদ্ধে ওই মা’কে মারপিট করে বাড়ি থেকে বের করে দেয়ায় চিরিরবন্দর থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
অভিযোগে ওই মা উল্লেখ করেন, আমার ছেলে ও ছেলের স্ত্রীর সাথে আমার সামান্য বিষয়ে মনোমালিন্য হলে আমার ছেলে এবং ছেলের বউ আমাকে মারপিট করে। এর আগেও আমাকে বেশ কয়েকবার সামান্য বিষয়ে আমার ছেলে এবং ছেলের বউ আমাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করে আসছিল।
এরই ধারাবাহিকতায় গত মঙ্গলবার বিকাল ৩টার দিকে আমার ছেলের স্ত্রীর সাথে পারিবারিক সামান্য বিষয় নিয়ে ঝগড়া লাগলে আমার ছেলে, ছেলের স্ত্রী ও তার শ্যালিকা আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে। আমি গালিগালাজ করতে নিষেধ করলে আমার ছেলে ও তার স্ত্রী আমার উপর ক্ষিপ্ত হয়ে তর্কাতর্কির এক পর্যায়ে আমার বউ আমাকে এলোপাতাড়ি মারতে শুরু করে।
ওই মা অভিযোগে আরও উল্লেখ করেন, আমার ছেলের বউ আমার চুলের মুঠি ধরে টানে হেচড়ে মুখে থাপ্পর দিয়ে রক্তাক্ত করে। এমন সময় পাশে পড়ে থাকা একটি বাঁশের লাঠি দিয়ে আমার বউ আমার ঘাড়ে, পিঠে, পায়েসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় মারপিট করে। এমন সময় আমার চিৎকারে আমার নাতি এগিয়ে আসলে তাকেও আমার ছেলে এলোপাতাড়ি মারতে থাকে। পরে দুজনের চিৎকারে প্রতিবেশিরা এগিয়ে আসলে আমাকে আমার ছেলে বলে, এবারের মত বেঁচে গেলি! এরপর সুযোগ মত পেলে মারপিট করে হা-পা ভেঙে দিয়ে লাশ বানিয়ে রাখব!
আমার ছেলে আমাকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়ে বলে, এই বিষয় নিয়ে বেশি বাড়াবাড়ি করলে এর পরিণতি ভালো হবে না। জীবনের স্বাদ চিরতরে মিটাই দিব! আমাকে আমার ছেলে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি প্রদান করে। বর্তমানে আমি আমার জীবন নিয়ে শঙ্কার মধ্যে আছি।
ওই মা বলেন, আমার ছেলে আমাকে বলে আমি তোকে চিনি না! আমার ঘরের ভেতর দিয়ে ছিটকিনি লাগিয়ে আমাকে বাইরে রাখছে। এখনো আমার টয়লেটের দরজায় তালা ঝুলিয়ে রাখছে। আমি এসবের বিচার চাই।
অভিযোগের বিষয়ে চিরিরবন্দর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সুব্রত কুমার বলেন, ‘এরকম একটি অভিযোগ আমার কাছে এসেছে। বিষয়টি শুনেই আমি পুলিশ দিয়ে আপাতত ওই মাকে ঘরে ঢুকিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছি। বৃহস্পতিবার মা ছেলে এবং ছেলের স্ত্রী ও তার শ্যালিকাকে থানায় ডেকেছি। আমরা চেষ্টা করছি বিষয়টি মিমাংসা করার। যদি এরপরেও ওই ছেলে এমন করে তাহলে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’